প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের কবিতা - ঘুরে দাঁড়াও : সামাজিক জাগরনের আবেগী ধারাভাষ্য
আমাদের বাসভূমি বিশ্ব নিয়ত বিবর্তিত হয়ে চলেছে। আর এই আবর্তনশীল পৃথিবীতে সার্থক অভিযোজন করে টিকে থাকতে হয় মানুষজনকে। কিন্তু কালের দুর্বিপাকে পৃথিবী তথা দেশের সার্বিক সামাজিক ভাঙন রুখতে কবির কন্ঠে প্রতিবাদের ভাষা মুখরিত হয়ে ওঠে--- উচ্চারিত হয় 'ঘুরে দাঁড়াও' এর মতো দাবী!
'সরতে সরতে' নিজেকে স্বযত্নে সরিয়ে আড়াল করে রাখতে রাখতে আমরা ক্রমশ ক্ষয়িষ্নু হয়ে পড়েছি। কিন্তু পৃথিবীকে 'আগামীর বাসযোগ্য' করে তুলতে হলে তো সবার আগে এক সুন্দর স্থিতিশীল বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে। কবির কথায় দরকার পড়লে তার জন্য 'ছোট্ট একটা তুক করে' এই বিশ্বকে সব দিক থেকে সুন্দর ও বাঞ্ছিত ভূমিতে পরিণত করতে কবির প্রয়াসী চেতনা আশাবাদী।
'সাইকেল রিকশোগুলো'র মতো একটি ভারসাম্য উঠবে --- সমাজ হবে সাম্যতার রাজ্য। সামাজিক পরিবেশ হবে সুন্দর ও লাবন্যভরা। 'কাদা ভর্তি রাস্তা পঙ্কিলতাময় বন্ধুর পথ হয়ে উঠবে 'ছায়াপথ'(Milky way) এর মতো মসৃন চিকন। বৃক্ষ-লতা থাকবে চিরসবুজ রসভ , 'উপান্তের শহরতলি' হবে মায়াময় সুন্দর। মানুষজনের মনে স্থায়িত্বে ফিরে আসবে আন্তরিকতা ---আনন্দে নির্ভাবনায় নির্দ্বিধায় আবেগে শিস টেনে গান ধরবে--- এই কবিমনের স্বপ্নিল ভাবনা-কল্পনা।
এই সবই তখনই বাস্তবতায় চলমানতা পেতে পারে যখন সমস্ত কিছু যেসব খারাপ মন্দ মলিনতা; লাবন্যহীন নিপীড়িত জীবনগুলি শৃঙ্খল মুক্ত হবে। তখনই আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে, শোষণ,নিষ্পেষনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ঘুরে ফিরতে পারবো এই কবির প্রত্যাশা। আর তা যদি না করতে পারি তাহলে ভীরুতার কাছে আপস করি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই এই চুপ করে থাকার চেয়ে লজ্জার আর কিছু আছে কি? তাহলে আমাদের 'বিন্দুর মতো মিলিয়ে' যেতে আর বেশী দেরী লাগবে না। তাই সাম্যবাদী দরদী কবির একমাত্র দাবী 'ঘুরে দাঁড়াও'।
0 মন্তব্যসমূহ